খানসামায় কালের সাক্ষী জয়গঞ্জ জমিদার বাড়ি:
কবেই বাংলা ছেড়ে ওপার বাংলায় পারি জমিয়েছেন, জমিদার জয়শঙ্কর রায় চৌধুরী! তা সবার অজানা। তবু কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে এই জমিদার বাড়ি। দিনাজপুর জেলার অন্যতম নিদর্শন বা পুরোনো স্থাপনার অন্যতম খানসামা উপজেলার এই জমিদার বাড়ি। দেশের ২৩৯টি জমিদার বাড়ির মধ্যে খানসামার জমিদার বাড়ি অন্যতম। উপজেলার সদর থেকে ৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে জয়গঞ্জে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি।জমিদার বাড়িটি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় জয়শঙ্কর রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়িটি এখন ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে।
জয়শঙ্কর জমিদারের নাম অনুসারে গড়ে উঠেছে জয়গঞ্জ বাজার।জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকেই ভবন গুলো পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। বিলুপ্ত হওয়া এই জমিদার বাড়ির দুটি দালানের মধ্যে একটি ভেঙ্গে গেছে, অক্ষত অপর দালানটিও নষ্টের পথে। জমিদার বাড়ির চারপাশে সরকারিভাবে গড়ে উঠেছে আদর্শগ্রাম। জমিদার জয়শঙ্করের কালের সাক্ষী হিসেবে রয়েছে ৪টি পুকুর। সেগুলো আদর্শগ্রামের লোকরাই ব্যবহার করে থাকে।এক সময় জমিদার বাড়িটিতে একতলা একটি প্রাসাদ ছিল, ছিল থাকার ঘর, বসার ঘর, মালামাল রাখার ঘর ও মন্দির। যার অনেক কিছুই বিলিন হয়ে গেছে। তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকাধীন এবং কিছু অংশ সরকারি খাস জমিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জমিদার আমলের সেই বটগাছটি। জমিদার বাড়ির প্রবেশদ্বারে লোহার গেটটিও এখন ব্যবহার হচ্ছে খানসামা থানার প্রবেশদ্বারে।জমিদার বাড়ির অনেক কিছুই নষ্টের পাশাপাশি চুরি হয়ে গেছে অনেক কিছু।তবে এই জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে পর্যটকদের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে।
খানসামা উপজেলার পাকেরহাট রাণীরবন্দর সড়ত হতে পূর্বদিকে মির্জা মাঠের মধ্যে অবস্থিত একটি মসজিদ। প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন মসজিদ ‘আওকরা’। এটির নামকরণের পেছনে রয়েছে অলৌকিক ইতিহাস। দিনাজপুরের প্রাচীন এ মসজিদকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানা কথা। প্রায় আড়াইশ’ বছর পূর্বে বাংলা ১১৭২ সালে মির্জা লাল বেগ মসজিদটি নির্মাণ করেন।জুমআটির চর্তুদিকে কোন ঘরবাড়ি না থাকায় কোন শব্দ করলে প্রতিধ্বনি হয়।এর নির্মাণ শৈলী চমৎকার। অভ্যন্তরে তৎকালীন কারুকাজ করা। একই সাথে রঙ করা মনে হয় সাম্প্রতিক সময়ে প্লস্টিক পেইন করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে মোঘল আমলে নির্মিত হয়েছে মসজিদটি। সম্রাট আকবরের দ্বীন-ই-এলাহী মতবাদের ভিত্তিতে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। একই সাথে ওই এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ও আছে।মসজিদটি উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নে অবস্থিত।
বর্তমানে মসজিদটির কাছাকাছি তেমন কোন জনবসতি নেই। ধারণা করা হয়, এক সময় মসজিদটির আশপাশে মুসলিম জনবসতি ছিল। যে কারণে এই ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।তবে মীর্জা লাল বেগের ওই মসজিদকে ঘিরে মীর্জার মাঠে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যা পরে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এ ছাড়াও একই স্থানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মীর্জার মাঠ আওকরা মসজিদ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আরও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS